বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১০ অপরাহ্ন
শিলখুড়ীতে ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে তাওহীদি জনতার বিশাল বিক্ষোভ
সমাপ্তি ইসলাম
বিশেষ প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার দাবিতে উত্তাল ধলডাঙ্গা বাজার থেকে হাজীপাড়া ঈদগাহ মাঠ।
গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে এবং একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ী ইউনিয়নে তাওহীদি জনতার ব্যানারে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার বাদ জুম’আ ধলডাঙ্গা বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে উত্তর ছাট গোপালপুর হাজীপাড়া ঈদগাহ মাঠ পর্যন্ত যায় এবং সেখান থেকে পুনরায় ধলডাঙ্গা বাজারে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও হাতে হাত মিলিয়ে মানবতার পক্ষে এবং ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র স্লোগানে মুখরিত করেন পুরো এলাকা।
বিক্ষোভে দেওয়া হয় জোরালো স্লোগান:
• ☞ নারায়ে তাকবির – আল্লাহু আকবার
• ☞ দুনিয়ার মুসলিম, এক হও এক হও
• ☞ দুনিয়ার মাজলুম, এক হও এক হও
• ☞ বদরের হাতিয়ার, গর্জে উঠো আরেকবার
• ☞ বিশ্ব মুসলিম ঐক্য গড়ো – ফিলিস্তিন স্বাধীন করো
• ☞ ফিলিস্তিনে হামলা কেনো – জাতিসংঘ জবাব দে
• ☞ আমার ভাই শহীদ কেনো – জাতিসংঘ জবাব দে
• ☞ আমার বোন শহীদ কেনো – জাতিসংঘ জবাব দে
• ☞ নেতানিয়াহুর দুই গালে – জুতা মারো তালে তালে
• ☞ স্বৈরাচার নিপাত যাক – ফিলিস্তিন মুক্তি পাক
বিক্ষোভ শেষে ধলডাঙ্গা বাজার চত্বরে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভূরুঙ্গামারী উপজেলা শাখার সেক্রেটারী মাওলানা মুফতী এস এম মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন,
“ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনে মুসলমানদের উপর যে বর্বর নির্যাতন চালিয়ে আসছে, তা বিশ্ব বিবেককে লজ্জিত করেছে। মুসলিম উম্মাহর এখন এক হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। স্বাধীন ফিলিস্তিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন থেমে থাকবে না।”
তিনি আরও বলেন,
“ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শুধু প্রতিবাদ যথেষ্ট নয়, আমাদের প্রতিটি ক্রয়চিন্তায়ও থাকতে হবে সচেতনতা। মুসলমান হিসেবে আমাদের উচিত—ইসরায়েলি ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের পণ্য বর্জন করা। আমি ক্রেতা ও বিক্রেতা—উভয়ের প্রতি আহ্বান জানাই, এই পণ্যগুলোকে না বলুন, যেন আমরা অর্থনৈতিকভাবেও জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি।”
অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনাব আলাউদ্দিন, জনাব হুমায়ূন কবির, ছাত্রনেতা লাবিব শাহরিয়ার সিয়াম, মাওলানা মাজিদুল ইসলাম এবং মাওলানা আঃ কুদ্দুস।
তারা সবাই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেন এবং জাতিসংঘের নীরব ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন।
বিক্ষোভে স্থানীয় যুবক, ছাত্র, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও নানা বয়সী জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। ধর্মীয় অনুরাগ ও মানবতা সচেতনতায় উজ্জীবিত এই জনস্রোত প্রমাণ করে, সাধারণ মানুষও ফিলিস্তিন ইস্যুতে গভীরভাবে সংবেদনশীল ও সচেতন।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলায় শত শত নারী ও শিশুর মৃত্যু এবং মানবিক বিপর্যয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ চলছে। শিলখুড়ীর এই প্রতিবাদ ছিল সেই ধারাবাহিকতার একটি বলিষ্ঠ বহিঃপ্রকাশ।