একজন পীরের ফয়েজ ভাই হয়ে ওঠা
ফেসবুকে এবিষয়ে লিখেছেন জিয়া আল-হায়দার, হুবহু লেখা তুলে ধরা হলো:
দেশের অলিতে গলিতে শাইখুল হাদিস , মুফতি , মুহাদ্দিস , মুনাজেরে জামান , খতিবে বাঙ্গাল , আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কোরআন ইত্যাদির ছড়াছড়ি ।
প্রতিটা হুজুরের সাথে আগে পিছে এমন দু চার দশটা লকব থাকেই ।
সবচেয়ে দুর্বল লক্কর জক্কর হুজুরকেও মিনিমাম "হযরত মাওলানা" "দামাত বারাকাতুহুম" বলতে হয় ।
দেশে পীরে কামেলেরও অভাব নাই । মাদ্রাসা থেকে পাশ দিয়ে বাপের মাদ্রাসায় পাঠ দান করলেই শাইখুল হাদিস হওয়া যায়।
মুফতি তো এখন পথে পথে ।
তবে এই অসংখ্য পীর মাশায়েখ মাওলানার মাঝে জনগণ তাদের "ভাই" খুঁজে পায় না।
আলেমরাও মানুষের ভাই হতে পারে না। ফলে তারা দূর থেকে সালাম সম্মান পায় ঠিকই, জনগণের নেতৃত্ব পায় না।
মানুষ তাদের শ্রদ্ধা করে, কথা শোনে না।
এটাই দেশের আলেম সমাজের প্রকৃত চিত্র।
এই অবস্থা বদলে গেছে বরিশালে।
একজন পীর , শায়খুল হাদিসকে অবলীলায় কিশোর যুবক ছাত্ররা এমনকি হিন্দুরা "ফয়েজ ভাই" বলে শ্লোগান দিচ্ছে !
মাদ্রাসা থেকে পাশ দিয়ে বের হয়েই অতি সহজে তিনি শাইখুল হাদিস ও পিতার আসনে গদিনশীন পীরে কামেল হয়ে গেছিলেন।
কিন্তু "ফয়েজ ভাই" হতে তাকে দীর্ঘ সাধনা করতে হয়েছে। মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে হয়েছে।
রাজপথে রক্তাক্ত হতে হয়েছে। জীবনে ঝুঁকি নিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়েছে।
ফলে শাইখুল হাদিস ও পীরে কামেল হওয়া যত সহজ ছিল , ফয়েজ ভাই হওয়া তত মধুর ছিল না।
এটা তার অর্জন। রক্ত দিয়ে অর্জন।
লকব টাইটেলের আড়ালে আলেমদের প্রকৃত সমাজ বান্ধবতা হারিয়ে গেছে।
সালফে সালেহীন কখনো নামের সাথে হযরত মাওলানা মুফতি শাইখুল হাদিস পীর এ সমস্ত লকব ব্যবহার করেন নাই।
এটা আধুনিক আলেমদের অহমিকা ও আত্মপ্রচার।
আলেম সমাজকে সিদ্ধান্ত নিয়ে নামের সাথে এসব লকব পরিহার করতে হবে।
এগুলো তাদেরকে মানুষ থেকে দূরে ঠেলে দেয়।
এসব লকবের মাধ্যমে নিজেদের নিন্দা সমালোচনার ঊর্ধ্বে নবী রাসুলের পর্যায়ে নিয়ে যান তারা।
লকব ছাড়া নাম নিলে তাদের ভক্তরা ঝাঁপিয়ে পড়ে।
দেশের সকল আলেমকে এভাবে বরিশালের মত "ফয়েজ ভাই" হয়ে উঠতে হবে।
এটা করতে পারলে জনগণই তাকে নেতৃত্বের মালা পরাবে ।
ফেসবুক লিংক: https://www.facebook.com/jia.al.haider/posts/669311069142312