বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৭:০৫ অপরাহ্ন
রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধ:
“শ্রমিক-মালিক এক হয়ে গড়বো এ দেশ নতুন করে”
এই স্লোগানকে সামনে রেখে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে আজ ০১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রমজীবী সংগঠন ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচির আয়োজন করে।
বৃহস্পতিবার (০১লা মে) সকাল ১০ঃ৩০ ঘটিকায় শহীদ মিনার চত্বরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার সাহা, শুভেচ্ছা বক্তব্যের পরে এক মিনিট নীরবতা পালন করে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি শহীদ মিনার চত্বর থেকে শুরু করে উপজেলার কেন্দ্রীয় মসজিদ চত্বর হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা মসজিদুল হুদা চত্বর এসে শেষ হয়।
র্যালিতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। র্যালি শেষে উলিপুর মসজিদুল হুদা চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা, উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জিল্লুর রহমান, উপস্থিত ছিলেন উলিপুর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মোঃ হায়দার আলী মিঞা, মো. আমিনুল ইসলাম, আব্দুল গনি, আব্দুল খালেক, আব্দুর রফিক, হামিদুর রহমান লিটন, আব্দুল খালেক, কমরেড দেলোয়ার হোসেন, ইদ্রিস আলী প্রমুখ ।
বক্তারা বলেন, শ্রমিকরা দেশের উন্নয়নের চালিকা শক্তি। তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করা না গেলে প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাঁরা ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দাবী জানান ।
শ্রমিকেরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কর্ম করে এই কর্মের ফল কেউ দিতে পারে না, তাদের কষ্ট আমরা বৃথা জেতে দিব না, তাদের ন্যায্য হিসাব তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে ।
১৮৮৬ সালের ১লা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা শ্রমদিনের দাবীতে আন্দোলন রত শ্রমিকের ওপর গুলি চালানো হলে ১১ জন শহীদ হয়।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শ্রমিকরাই সম্মুখযুদ্ধ করেছে। জীবন দিয়েছে। বুকের রক্ত দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছে। চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আমার ভাই উমর ফারুকসহ দুই শতাধিক শ্রমিক শাহাদাতবরণ করেছে। শ্রমিক-মেহনতি মানুষের জীবন, রক্ত ও ঘামের দাঁড়িয়ে আছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। অতএব, শ্রমিকদের নাগরিক অধিকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে পূরন করতে হবে। শ্রমিকদের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান এবং শ্রমিকসন্তানদের শিক্ষার বন্দোবস্ত করতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ হতে হবে শ্রমিকবান্ধব। শ্রমিকদের যথাযথ অধিকার প্রদানের মাধ্যমেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। আর শ্রমিকবান্ধব ও ইনসাফভিত্তিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে শ্রমিকজনতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রতিবারের মতো এবারও অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়েছে।