বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গীতে ড্রেনের পানি ফেলা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত- ১ জন । নওগাঁয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিরসঙ্গে ডাসকোর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত বাকশীমুল ইউনিয়ন বিএনপির নবগঠিত কমিটি ঘোষণা: সভাপতি জসিমউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক পলাশ নওগাঁয় বাল্যবিবাহ ও প্রতারণা বিশারদ কাজী বেলাল, ভাঙছে শত শত পরিবার মেহেরপুরে বিএনপির কমিটি গঠনে কোন্দল গড়ালো আদালতে মামলায়  অটোপাসের দাবিতে উত্তাল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উপাচার্যের ওপর হামলা কপোতাক্ষ নদ থেকে বালু উত্তোলন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে উপর অবৈধ হাট- বাজার উচ্ছেদের নামে চোর-পুলিশ খেলা মনিবুল হক বসুনিয়াকে কর্মস্থানে পুনর্বহালের দাবিতে রাজারহাটে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাভারের আ.লীগ নেতার সাথে এক ব্যবসায়ী এর ছবি এডিট করে অপপ্রচার- নুরুজ্জামান প্রতিবাদ

ঠাকুরগাঁওয়ে দলিল লেখক সমিতির চাঁদাবাজি–বছরে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ।

 

মোঃ মজিবর রহমান শেখ
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,,

ঠাকুরগাঁও সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখক সমিতির নামে জমি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছ থেকে নিয়মিতভাবে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, বছরের পর বছর ধরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই সমিতি। এ নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে কয়েকবার লিখিত পদক্ষেপ নেওয়া হলেও সমিতির নেতারা তা তোয়াক্কা করছেন না। এমনকি বাংলাদেশ নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহিদুল আলম ঝিনুক এক নির্দেশনায় দেশের সব সাব-রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্টারদের সতর্ক করে বলেছেন, কোনো অফিসে যেন দলিল লেখক সমিতির ব্যানারে নির্ধারিত হারে অবৈধ চাঁদা আদায় না হয়। কিন্তু এসব নির্দেশনা সত্ত্বেও ঠাকুরগাঁও সদর অফিসে চলছে চাঁদাবাজি। স্থানীয়দের অভিযোগ, সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ সরকার ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে সমিতির সভাপতি পদে থেকে এসব অনিয়মে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সমিতির একজন সদস্য কছির উদ্দিন স্বীকার করে বলেন, প্রতিদিন ৬০–৭০টি দলিল লেখা হয়, এবং প্রতিটি দলিল থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করা হয়, যা সমিতির ফান্ডে জমা হয়। তিনি আরও বলেন, “টাকা না দিলে ফাইল ছাড়ি না। এটা আমাদের নিয়ম।”প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ঠাকুরগাঁও সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ৮১ জন সনদপ্রাপ্ত দলিল লেখক রয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী, দলিল লেখার নির্ধারিত ফি ও সরকারি খরচ তালিকাভুক্ত করে টাঙানোর কথা থাকলেও, বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না। বরং মানুষকে জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী হুমায়ুন কবির রেজা বলেন, “লিখিত ফি জানতে চাইলে তারা বলে কোনো নির্দিষ্ট হার নেই। নিজেদের ইচ্ছেমতো টাকা নেয়। সমিতির নামে চলছে চাঁদাবাজি।” আরেক ভুক্তভোগী বলেন, দুই শতক জমির দলিল করতে সাড়ে তিন হাজার টাকা দিতে হয়েছে, যার মধ্যে দুই হাজার টাকা নিয়েছে দলিল লেখক সমিতি। দলিল লেখক সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, “আমরা পারিশ্রমিক নেই, চাঁদাবাজি করি না। কেউ খুশি হয়ে ৫–১০ হাজার টাকাও দেয়। আবার কেউ ২ হাজারও দেয়।”এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর সাব-রেজিস্ট্রার রেজাউল করিম বলেন, “জিম্মি করে অর্থ আদায় করা সম্পূর্ণ অনৈতিক। কেউ অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নিই। তারপরেও কারও বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”দুর্নীতি দমন কমিশনের ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরিফ মারজী জানান, “চাঁদা নেওয়া বেআইনি। কেউ লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”জনসাধারণ বলছে, সরকারের নির্দেশনা, প্রশাসনের পদক্ষেপ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের তদারকির মধ্যেও দলিল লেখক সমিতির চাঁদাবাজি বন্ধ হচ্ছে না। মানুষ এখন প্রতিকার চায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত