বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন
ফাতিমা আক্তার লিজা
ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের উত্তর ছাট গোপালপুর গ্রামে এক নারীর বৈধভাবে ক্রয়কৃত জমি দখলের চেষ্টা, চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া এবং বাড়িতে হামলার ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবার।
ভুক্তভোগী খুকুমনি বেগম (৪৫) জানান, তার স্বামী মোঃ ওমর আলীকে নিয়ে তিনি প্রায় ৩০-৩৫ বছর ধরে নিজ নামে ক্রয়কৃত ৬৭ শতক জমির একটি অংশে বসবাস করে আসছেন। জমির বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে ওই জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া চলাচলের একমাত্র রাস্তাটিও তারা বন্ধ করে দিয়েছে।
লিখিত অভিযোগে খুকুমনি বেগম জানান, অভিযুক্তরা একাধিকবার দলবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র — লাঠি, রড, দা, কুড়াল ও শাবলসহ এসে জমিতে ভয়ভীতি দেখিয়েছে এবং পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। ৫ মে গভীর রাতে তারা চলাচলের রাস্তায় গর্ত খুঁড়ে খুঁটি পুঁতে বেড়া দেয়। বাধা দিলে গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া হয়।
সর্বশেষ ১০ মে রাতেও অভিযুক্তরা দলবদ্ধ হয়ে বাড়ির সামনে এসে গেট ভাঙার চেষ্টা করে এবং আশপাশে ঘোরাঘুরি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। নারী ও শিশুরা চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ভূরুঙ্গামারী থানায় দায়ের করা অভিযোগে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা হলেন:
১. মোঃ হাফিজুর রহমান ওরফে নাটু (৩০), পিতা-মৃত মোক্তার আলী
২. মোঃ আঃ হাকিম (৮০), পিতা-মৃত নৈমুদ্দিন
৩. মোঃ শাহ আলী (৪৫), পিতা-মোঃ শোয়ু মিয়া
৪. মোঃ মফিজ উদ্দিন (৪০), পিতা-মোঃ আহাম্মদ আলী
৫. মোঃ হান্নান মিয়া (৩০), পিতা-মোঃ খোরশেদ আলী
৬. মোছাঃ জেসমিন বেগম (২৬), স্বামী-মোঃ হাফিজুর রহমান ওরফে নাটু৷
এ বিষয়ে স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন ইউসুফ বলেন,
“অভিযুক্ত হাফিজুর একাধিকবার চলাচলের রাস্তা বন্ধ করেছে। আমি নিজেও ২ ফুট জায়গা ছেড়ে দিয়েছিলাম, সেটিও দখল করে বেড়া দিয়েছে। জমির কাগজপত্র দেখে আমরা স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছি, কিন্তু তারা কোনো কথাই মানছে না।”
ঘটনা স্থলে গিয়ে কথা হলে হাফিজুর রহমান ওরফে নাটু বলেন,
“এই জায়গা আমার। আমি আমার জমিতে বেড়া দিয়েছি। কেউ কিছু বললে আমি শুনবো না, বেড়া খুলবো না।”
ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ জানান,
“অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
খুকুমনি বেগম বলেন,
“আমরা এখন ঘর থেকে বের হতে পারি না। ছেলে কাজে যেতে পারে না। যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তার দায় কে নেবে?”
তিনি প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।