বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৬:২৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: মোঃ শাহজাহান বাশার
হত্যাসহ একাধিক ফৌজদারি মামলার আসামি হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুর জেলার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে করে তাঁকে আদালতে আনা হয়।
মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে হরতাল চলাকালে সংঘটিত একটি প্রাণঘাতী ঘটনার প্রেক্ষিতে হত্যা মামলাসহ আরও একাধিক মামলা চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসব মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয় এবং রিমান্ড শেষে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত পুলিশের ওসি আবুল খায়ের জানান, ২০১৩ সালের এক হরতালে সিঙ্গাইর উপজেলার গোবিন্দল এলাকায় পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হন। ওই ঘটনায় মমতাজ বেগমকে ৩ নম্বর আসামি করে ২০২৪ সালের ২৫ অক্টোবর উপজেলার গোবিন্দল গ্রামের মো. মজনু মোল্লা বাদী হয়ে সিঙ্গাইর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এছাড়াও হরিরামপুর থানায় মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, তার নির্বাচনী এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম, হামলা, ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৯ অক্টোবর হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মুহম্মদ আব্দুন নূর এবং আদালত-৩ এর বিচারক আইভি আক্তারের আদালতে মমতাজ বেগমের শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে পুলিশি প্রহরায় তাঁকে আদালত কক্ষে নেওয়া হয়।
এর আগে ঢাকায় দায়ের হওয়া বিভিন্ন থানার হত্যা মামলায় চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন মমতাজ বেগম। ওই রিমান্ড শেষে তাঁকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর মানিকগঞ্জের মামলাগুলোতে তাঁকে আদালতে হাজির করা হলো।
একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাবেক এমপির বিরুদ্ধে এ ধরনের গুরুতর ফৌজদারি মামলার প্রসঙ্গে জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মমতাজ বেগমের ভক্ত, অনুসারী ও রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে মমতাজ বেগমের পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবীরা জানিয়েছেন, “তাঁকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা জামিনের আবেদন করব।”
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, “নির্দিষ্ট অভিযোগ ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাঁকে মামলার আসামি করা হয়েছে। আদালত আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দেবেন।”