বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৬:৪০ অপরাহ্ন
এস এম মনিরুজ্জামান, স্ট্যাফ রিপোর্টার: অভয়নগরে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, অভিযুক্ত প্রথম আলোর প্রতিনিধি ও ব্যাংক ম্যানেজারসহ পাঁচজন।
অভয়নগর (যশোর): সাংবাদিকতার পরিচয় ব্যবহার করে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মাধ্যমে অভয়নগরের একটি স্বনামধন্য প্রেসক্লাবের সঞ্চয়ী তহবিল থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিস্ময়কর তথ্য সামনে এসেছে। এতে দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি এবং একটি বেসরকারি ব্যাংকের ম্যানেজারের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় অভয়নগর প্রেসক্লাবের সঞ্চয়ী হিসাব (নং 0170347546031) থেকে ২০,০০০ টাকা গোপনে উত্তোলনের মাধ্যমে। প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, উক্ত অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ উত্তোলনের জন্য সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ক্যাশিয়ারের যৌথ স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক হলেও ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করা হয়।
অভিযুক্তরা হলেন:
১. ফারুক হোসেন (৫৫)
২. মাসুদ আলম (৫২), যশোর প্রতিনিধি, প্রথম আলো
৩. চৈতন্য কুমার পাল (৫০)
৪. মনিরুজ্জামান মিল্টন (৪৮)
৫. মোঃ আশিকুর রহমান (৪৭), ম্যানেজার, আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি, নওয়াপাড়া শাখা
অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর হঠাৎ করে পরস্পর যোগসাজশে ব্যাংক ম্যানেজারের সহযোগিতায় চেকপ্যাডে জাল স্বাক্ষর করে অর্থ উত্তোলন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে কামরুল ইসলাম ব্যাংক থেকে স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করে প্রতারণার প্রমাণ পান। ব্যাংক ম্যানেজার আশিকুর রহমানকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সরাসরি উত্তর না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
জাল স্বাক্ষর, গোপন কার্যক্রম এবং প্রভাবশালী পরিচয়ের অপব্যবহার—সব মিলিয়ে একটি পরিকল্পিত প্রতারণা সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগকারীর দাবি। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিষয়টি আপোষে নিষ্পত্তির চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি।
এ ঘটনায় সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত রয়েছেন:
মোঃ মিজানুর রহমান (৩৮)
মোঃ রিপানুর ইসলাম রিপন (৪৮)
মোঃ আমিরুল ইসলাম (৩৮)
আশরাফুল ইসলাম মাসুম (৩৭)
সাংবাদিকতার আড়ালে দুর্বৃত্তায়ন!
এই ঘটনায় অভয়নগরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সাংবাদিকতার মতো পেশাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়দের অভিমত—”এটি শুধু অর্থ আত্মসাত নয়, এটি সাংবাদিকতার প্রতি জনগণের বিশ্বাসে আঘাত।”
অভিযোগকারী কামরুল ইসলাম বলেন,
“দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে এমন প্রতারণা আরও বাড়বে। আমরা ন্যায়বিচার চাই।”
অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।