শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন
হাফেজ মোমেন রূপগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
ঈদ আসছে। কোরবানীর জন্য গরু দরকার। ঈদে নির্ভেজাল গরুর চাহিদা একটু বেশিই। আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে দেশিয় পদ্ধতিতে রূপগঞ্জের খামারিরা গবাদি পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন ওষুধ এবং খড়, ভূষিসহ দেশিয় খাবার দিয়েই মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি হাতে নিয়েছেন রূপগঞ্জের গরু খামারিরা। দেশিয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করায় এ অঞ্চলের গরুর চাহিদা অনেক বেশি। বাজারে দেশিয় গরুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় এ ঈদে লাভবান হবেন বলে আশাবাদী খামারিরা। তবে কোরবানীর ঈদের আগে ভারত থেকে হাটে বাজারে পশু প্রবেশ করলে ক্ষতির মুখে পড়ার আশংকায় দিন কাটছে ব্যবসায়িদের।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, অসাধু গরু ব্যবসায়িরা কৃত্রিম উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণ করলেও দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার কৃষক ও খামারিরা। প্রতি বছরই ঈদ এলে গরু বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন এ উপজেলার কৃষকেরা। ছোট বড় খামারের পাশাপাশি প্রতিটি কৃষক পরিবার ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করে থাকেন। নিষিদ্ধ ঘোষিত ক্ষতিকর ইনজেকশন ও ট্যাবলেট পরিহার করে ঘাষ খড়ের পাশাপাশি খৈইল, ভূষি, কুঁড়া, ফেন (ভাতের মাড়) খাদ্য হিসেবে খাওয়ানোর মাধ্যমে মোটাতাজা করা হচ্ছে এসব গরু। উপজেলার মিথেন এগ্রো ফার্মের মালিক মিথেন সরকার বলেন, দেশিয় জাতের গরু লালন পালন করা হয়েছে তার খামারে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে এসব গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। দেশিয় গরুর চাহিদা থাকায় এরই মধ্যে খামার পরিদর্শনে আসছেন ক্রেতারা। অনেকে খামার থেকেই গরু কিনে নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের বরুনা এলাকার নজরুল ইসলাম জানান,শুধু ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয়, নিজের কোরবানীর গরু সংগ্রহ ও মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত গরু প্রদানের জন্যেই আমার এ উদ্যোগ। দেশিয় পদ্ধতিতে মোটাতাজাকরণ করা গরুগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেক খামারেই বিক্রি হয়ে গেছে। বাজারেও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এসব দেশি জাতের গরুর। উপজেলার খামার পাড়া এলাকার গরু ব্যবসায়ি কফিল উদ্দিন জানান, দফায় দফায় গো খাদ্যের দাম বাড়ায় এবং ভারত থেকে গরু আনার কারণে গত তিন বছর ধরে লাভের মুখ দেখতে পারেনি রূপগঞ্জের গরু ব্যবসায়িরা। এবছর খামারি ও পালনকারীরা লাভের আশায় বুক বাধতে শুরু করেছেন।
এ বছর উপজেলার বিভিন্ন জাতের বিপুল পরিমান গরু পালন করা হচ্ছে। যা দ্বারা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন হাটেও পাঠানো হবে। তাদের আশা এবারের হাটে আশানুরূপ দামও পাওয়া যাবে। ঈদ উপলক্ষে উপজেলার শতাধিক খামারি ও কৃষক দেশিয় পদ্ধতিতে ১২ হাজার গরু মোটাতাজা করছেন উল্লেখ করে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার দাশ বলেন, রূপগঞ্জে এ বছর কোরবানীর পশুর চাহিদা রয়েছে ৮ হাজারের উপরে। আমাদের কাছে রেজিস্ট্রিকৃত খামারেই গরু রয়েছে ১২ হাজারের উপরে। এছাড়াও প্রান্তিক চাষিরাও সবাই ২/৪ টি গরু ছাগল লালন পালন করেন কোরবানীর ঈদে বিক্রির জন্য। সঙ্কট তো হবেই না, বরং অন্য উপজেলায় সাপ্লাই দেয়া যাবে। তিনি আরো বলেন, এ বছর কোথাও কৃত্রিম উপায়ে পশু পালন করেনি খামারি বা কৃষকরা। সেক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ তদারকি করেছেন এবং খামারিরাও এ বিষয়ে অনেক সচেতন রয়েছেন। তাছাড়া গরু মোটাতাজাকরণে নিষিদ্ধ ওষুধ ব্যবহার না করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।